রাজবাড়ী টুডে ডট কম: সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক আর নেই। ফুসফুসে ক্যান্সার আক্রান্ত দেশবরেণ্য এই কবি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন)।
মঙ্গলবার বিকালে ইউনাইটেড হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
সৈয়দ হক স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তার স্ত্রী আনোয়ারা সৈয়দ হকও কথাসাহিত্যিক।
ইউনাইটেড হাসপাতালের কমিউনিকেশন ম্যানেজার চিকিৎসক সাগুফতা আনোয়ার লেখকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সৈয়দ হকের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে দেশের সাহিত্য অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সব্যসাচী লেখকের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন।
ফুসফুসে ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য এই লেখক চার মাস লন্ডনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখান থেকে গত ১ সেপ্টেম্বর তিনি দেশে ফিরে আসেন।
পরবর্তীতে দেশবরেণ্য এই লেখক ঋতু পরিবর্তনজনিত জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর থেকেই তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
সৈয়দ হককে সোমবার কেবিন থেকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে তার শ্বাস-প্রশ্বাসে জটিলতা দেখা দিলে কৃত্রিম উপায়ে (ভেন্টিলেশনে) তার শ্বাস-প্রশ্বাস দেয়া হয়।
কিন্তু এরপর থেকে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সঙ্গে কবির হৃদযন্ত্র ও কিডনি ঠিকমতো কাজ করছিল না। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেয়া হলেও অবস্থার অবনতি হওয়ায় তা স্থগিত করা হয়।
কবিতা, নাটক, গল্প, উপন্যাস, চলচ্চিত্রসহ সাহিত্যের সব শাখায় অসামান্য অবদান রাখা সৈয়দ হক ১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুড়িগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
গুণী এই সাহিত্যিকের ‘খেলারাম খেলে যা’, ‘নীল দংশন’, ‘মৃগয়া’, ‘সীমানা ছাড়িয়ে’, ‘আয়না বিবির পালা’সহ বহু পাঠকপ্রিয় বই রয়েছে। তার লেখা দুটি অমর নাটক ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ ও ‘নুরুল দীনের সারাজীবন’।
বাংলা সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, আদমজী সাহিত্য পুরস্কার বহু পুরস্কার পেয়েছেন সব্যসাচী এই লেখক।