স্টাফ রিপোর্টার, রাজবাড়ী টুডে: মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য। কিন্তু আসলে কি আমরা মানুষের কিছু করতে পেরেছি বা পারি কিংবা চেষ্টা করি ? আবেগ, মূল্যবোধ, নীতি কথা এগুলো মানুষকে এখন আর ভাবায় না। যান্ত্রিকতার যুগে আমরা অনেকটা যান্ত্রিক হয়ে গেছি।
সামিয়া আক্তার বয়স ৮ বছর, বাবা শারীরিকও মানুষিক বুদ্ধি প্রতিবন্ধি সুরুজ শেখ। জন্ম স্থান শেরপুর জেলায়, বর্তমানে ঢাকার যাত্রাবাড়ী কেরানীপাড়া মোড় এলাকায় শুকুর খানের বাড়ীতে, মাটির ঘরের জড়াযীর্ন একটি কক্ষে ভাড়া থাকেন।
গতকাল ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে তার পাশে ছিলেন তারি আরেক হতদরিদ্র ফুফাতো বোন মনি ১৪ বছরের শিশু, সামিয়ার অগ্নি দগ্ধ হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে। সে বলে আমার সমান সামিয়ার একটা বড় ভাই আছে, সে একটা স্পিংমিলে চার হাজার টাকা বেতনে চাকুরী করে। আর ঘরের রান্নাবারা সহ যাবতীয় কাজ করে ছোট্ট সামিয়া। প্রতিদিনের মতো নাস্তা বানাতে সামিয়া ডিম ভাজি করতে গিয়ে গ্যাসের পাওয়ার কম থাকায়, চুলার ফুল ভলিউম বাড়িয়ে দেয়। সামিয়া বুঝতে পারার আগেই হঠাৎ করে লাইনে গ্যাসের চাপ বেড়ে যায়, খেয়াল করার আগেই ওর শরীরে আগুন লেগে যায়।
ওর চিৎকারের শব্দ শুনে আশপাশের সবাই এসে, এই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ ভর্তি করিয়ে দেয়। চারদিক ধরে এখানে আছে, দুই ব্যাগ রক্ত বাকি এনেছি, ডাঃ সাহেব ঔষুধ কেনার জন্য দুই হাজার টাকা দিয়েছেন, আমরাতো সবাই গরিব বস্তিতে ভাড়া থাকি। তার পরেও আত্মীয় স্বজনরাও এলাকাবাসী মিলে ১৬হাজার টাকা খরচ করেছে, এখন আর কেউ টাকাও দেয়না এখানে এসে কেউ সামিয়ার খবরও নেয় না। সামিয়া কেমন আছো কি খাবে জানতে চাইলে। টাকাতো নাই ভাত খাবো বলে কান্নায় চোখ ভিজে অজস্র পানিতে বুক ভেসে যায় এতিম সামিয়ার।
ভিক্ষুক শারীরিক ও মানুষিক প্রতিবন্ধী বাবার। মা হারা ৮ বছরের শিশু সামিয়ার অস্বাভাবিক দৃশ্যটি আমাকে কিছুক্ষণের জন্য হলেও থামিয়ে দেয়। বুকের মধ্যে কষ্ট অনুভব হয়। কিছু মানুষ শুধু পৃথিবীতে আসে কষ্ট পাওয়ায় জন্য, আমাদের তো শিক্ষা কর্ম টাকা, থাকায় জন্য ঘরবাড়ী, কারো গাড়ি আছে। ওরা ভিক্ষুক ওরাও তো মানুষ, ওদের যে সৃষ্টিরকর্তা সৃষ্টি করেছে। আপনার আমার তো তিনিই সৃষ্টি করেছে, আমরাও ভিক্ষুকের সন্তান হয়ে জন্ম নিতে পারতাম। সামিয়ার মতো অগ্নিদগ্ধ হয়ে অর্থের ওভাবে খাওয়া চিকিৎসা না পেয়ে বার্ণ ইউনিটে যন্ত্রণা কাতরাতে পারতাম।
ডাক্তারা বলেন শিশুটির শরিরে মারাত্মক ভাবে আগুনে ঝলসে গেছে। ডাক্তারগণ আরো জানান জরুরীভাবে সামিয়াকে চিকিৎসা করালে, আগের মতোই সুস্থ হয়ে যাবে। শিশু সামিয়ার সুচিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ১ লক্ষ টাকা বেশি। ১বছর আগে একটি অগ্নি দূর্ঘটনা চিকিৎসার অভাবে শিশু সামিয়ার মা মারা যান। বাবা শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধি বর্তমানে ভিক্ষা করে, তাদের কোনো অর্থ সম্পদ নেই। ফলে এতিম সামিয়া অসহায় হয়ে পরে, চিকিৎসা খরচ চালানোর মত সে সামর্থ তাদের নেই।
এতিম সামিয়া আক্তারের মা গত ১বছর আগে টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে, সামিয়া জানে না। তার সামনে কত জটিল পথ। তার মুখের নির্মল হাসি তা বলে দেয়। সে এমন পৃথিবীর প্রত্যাশা করে না। এ পৃথিবীতে আমরা অসহায় স্বপ্নের জন্য কতটুকু করতে পেরেছি?
নিরুপায় হয়ে আজ আমি এই এতিম মেধাবী দ্বিতীয় শ্রেণীর শিশু মেয়েটির চিকিৎসার্থ কাজে জরুরীভাবে, সকলের কাছে মানবিক আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
সামিয়াকে বাঁচাতে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে দিতে মানবিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন।
যোগাযোগ (সাংবাদিক মুহাম্মদ আলী) ০১৭২৫৪০৪০০৪/০১৮২৫৪০৪০০৪ বিকাশ,
অথবা সরাসরি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, বার্ণ ইউনিট ফিমেল ওয়ার্ড লেভেল থ্রী,৩য় তলা।
অথবা মেয়েটির অসুস্থতার বিষয়ে সত্যতা যাচাই করতে চাইলে রাজবাড়ী টুডে.কম নিউজরুম এডিটর রবিউল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন-০১৬১৩,১৯৭১৭১,০১৭১২-০৮৪৮৭৬।
আসুন আমরা সবাই প্রতিজ্ঞা করি যে আমরা অসহায় এতিম চিকিৎসা বিহীন সামিরার মতো শিশু ও অসহায় মানুষের জন্য একটি বাসযোগ্য পৃথিবীর গড়ার চেষ্টা করব।