খন্দকার রবিউল ইসলাম, রাজবাড়ী টুডে: রাজবাড়ী সাব-রেজিস্ট্রটার অফিসে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ এগিয়ে আসলেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী।
সরকারি নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে রাজবাড়ীতে চলছিলো জমি রেজিস্ট্রির বিনিময়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায়। এমন খবর ছিলো রাজবাড়ীবাসীর মুখে মুখে। এমন অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা সকল শ্রেণী পেশার মানুষের মধ্যে আলোচনার এক বিষয় হয়ে দাড়িয়ে ছিলো। তবু যেন ছিলো না প্রতিবাদ করার মত কেউ।
এমন দুর্নীতির খবর যখন রাজবাড়ীতে সর্বচ্চ প্রর্যায় উঠে আসে। ঠিক তখনই জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী হস্থক্ষেপ করেন। জেলা আওয়ামী লীগের ইরাদত আলী রাজবাড়ী সাব-রেজিস্ট্রটার ও দলিল লেখকদের বলেছেন, দলিল করতে আসা কোন গ্রাহকের কাছ থেকে সরকারী ফি র বেসি টাকা নেওয়া যাবে না। যদি কোন দলিল লেখক সরকারী ফি র বাইরে কোন রকম বেসি টাকা নেয় তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সাধারণ মানুষকে হয়রানি করলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুশিয়ারী দেন তিনি।
দীর্ঘদিন ধরে প্রতি মাসে অবৈধভাবে প্রকাশ্য কোটি টাকা আদায় করছিলো একটি পক্ষ। অতিরিক্ত টাকা গ্রহণের বিষয়ে সদর সাব-রোজিস্ট্রারের কাছে অভিযোগ করেও পায়নি কেউ কোনো প্রতিকার। অভিযোগ করেও অনেকই পরেছেন বিপদে। সিন্ডিকেটের সদস্য ও দলিল লেখকদের ছিলো শক্তি শালি একটি গ্রুপ।
রাজবাড়ী সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিস কেন্দ্রিক যে চক্র ছিলো তারা নিতো ১০ শতাংশ হারে।
ফলে মাসিক কয়েক কোটি টাকা ওই চক্র হাতিয়ে নিয়ে সাধারণ জনগণকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করে আসছিলো।
আজ সেই আর্থিক ভাবে ক্ষতির হাত থেকে সাধারণ মানুষকে বাচাতে এগিয়ে এসেছেন জননেতা কাজী ইরাদত আলী। মাসে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে সাধারণ মানুষকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস কর্তৃক গড়ে ওঠা ওই চক্র কে ভেঙ্গে দিয়েছেন তিনি।
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী বলেন, সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে সরকারী নিয়মের বাইরে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে আসছিলো কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও দলিল লেখক। বিয়ষটি আমি জানার পরে সাব-রেজিস্ট্রিার ও দরিল লেখকদের বলেছি এভাবে কোন সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সরকারী নিয়মের বাইরে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া যাবে না। যদি সরকাকারী নিয়মের বাইরে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়। তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, যদি কোন দলিল লেখক এই নির্দেশ অমান্য করে তার লাইন্সে বাতিল করে তার বিরুদ্ধ আইনগত ব্যবস্থা করা হবে।
শুধু রাজবাড়ী সদর নয় এমন দুর্নীতি ও অনিয়ম রয়েয়ে পাংশা উপজেলাতেও: পাংশা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস কেন্দ্রিক গড়ে ওঠা একটি সিন্ডিকেট নিয়মবহির্ভূতভাবে দলিলের মোট টাকার ১৪ শতাংশ হারে অর্থ আদায় করে নিচ্ছেন।
রাজবাড়ী পৌরসভার পাশে নব-নির্মিত জজ ভবনের থাকা সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের তালিকায় দেখা যায়, কবলা দলিলের ফিস মূল্য ২ শতাংশ, ইফিস একশ টাকা, এন ফিস ৪০ টাকা (প্রতি পৃষ্ঠা), স্থানীয় সরকার কর ৩ শতাংশ, উৎস কর ১ শতাংশ (পৌরসভার এলাকার বাহিরের জমি) এবং উৎস কর ২ শতাংশ (পৌরসভার এলাকার জমি)। এতে দেখা যায়, কবলা দলিল প্রতি পৌরসভার এলাকার বাইরের জমি শতকরা ৬ শতাংশ এবং পৌরসভার এলাকার জমি শতকরা ৭ শতাংশ হারে নেয়ার কথা।
অভিযোগ রয়েছে সাব-রেজিস্ট্রার অফিস সহকারী গুরু দাস বিরুদ্ধে: একাধীক দলিল লেখক বলেন, অফিস সহকারী গুরু দাস বলেছেন প্রতি দলিলে ১% হারে টাকা দিতে হবে তা না হলে দলিল হবে না। তাই আমরা বাধ্য হয়েই একপ্রকার সরকারী নিয়মের বাইরে কিছু টাকা নিয়ে থাকি। সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে যদি কাউকে কোন টাকা না দিতে হয় তাহলে আমরাও কারো কাছ থেকে সরকারী ফি-র বাইরে কোন টাকা নিব না।
দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাবলু বলেন, আমাদের দলিল লেখকরা কোন দুর্নীতির সাথে জড়িত নয়। আমরা সরকারী নিয়ম অনুযায়ী ফি নিয়ে থাকি।
দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ রনি জানান, আমরা দলিল লেখক আমাদের কাছে দলিল করতে আসা গ্রাহকদের কাছ থেকে আমরা শুধু সরকারী নিয়ম অনুযায়ী ফি নিয়ে দলিল করে দেয়। তাদের কাছ থেকে কোন বারতি টাকা নেওয়া হয় না।
রাজবাড়ী সদরের ভারপ্রাপ্ত জেলা সাব-রেজিস্ট্রার গোলাম মাহাবুব তিনি বলেন, অতিরিক্ত টাকা কে নেই কে কাকে দেয় সেটা আমার জানা নেই। সরকারী নিয়মের বাইরে যদি কোন দলিল লেখক সাধারণ জনগণের কাছ থেকে কোন টাকা নিয়ে থাকে সে বিষয়ে অভিযোগ পেলে সেই দলিল লেখকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরো বলেন, ইতি মধ্যে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে দু একজনের লাইন্সে বাদিল করা হয়েছে।