স্টাফ রিপোর্টার, রাজবাড়ী টুডেঃ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে তোলা কয়েকটি বালু ঘাট ভেঙে দিয়েছে প্রশাসন। প্রশাসনের বাঁধা পেয়ে ফিরে গেছে বালু বোঝাই বেশ কয়েকটি বলগেট।
শনিবার (১২ জুন) সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত গোয়ালন্দ উপজেলা প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিএ কতৃপক্ষ ঘাট এলাকায় যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করে।অভিযানে দৌলতদিয়ার ৬ নং ও ৭ নং ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাট এলাকায় গড়ে তোলা কয়েকটি বালু ঘাট ভেঙে দেয়া হয়। এ সময় বালু নিয়ে আসা বেশ কয়েকটি বলগেট প্রশাসনের বাঁধায় ঘাটে ভিরতে না পেরে ফিরে যায়। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি বলগেট কোন উপায় না পেয়ে ৬ নং ঘাটে নোঙর করে রাখে।
জানা গেছে, পদ্মা নদীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকার দুই কিলোমিটার উজান এবং চার কিলোমিটার ভাটি পর্যন্ত ৪শত ৩০ কোটি টাকার নদী শাসন ও ফেরিঘাটের উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। কিন্তু নতুন করে নির্মিত দৌলতদিয়া ৭নং ফেরিঘাটের সড়ক এবং ফেরিঘাট এলাকায় নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিলো কতিপয় বালু ব্যবসায়ী। এতে করে দৌলতদিয়া ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদের কৃষিজমি, বসতবাড়ী নদীগর্ভে বিলীন হতে চলছিল। গোয়ালন্দ উপজেলার এসব প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ীদের সাথে দফায় দফায় সভা করে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা। সেই সভার সিধান্ত থেকে অভিযান পরিচালনা করা হয় বলে জানা গেছে। তবে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় বালু ব্যবসায়ীদের মধ্যে বেশিরভাগই ক্ষমতাশীন দলের প্রভাবশালী নেতা রয়েছেন বলে বেশ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছেন। অভিযান পরিচালনার সময় বেশ কয়েকটি বালুবাহী বাল্কহেড মেশিন পালিয়ে যায়।
এ সময় কয়েকজন বলগেট চালক বলেন, বালু গুলো নিয়ে এখন আমরা কি করবো জানি না।বালু আনলোড করতে না পারলে বিল পাব না।সে ক্ষেত্রে শ্রমিকদের বেতন দেয়াসহ অন্যান্য ব্যায় নির্বাহ করা কঠিন হয়ে যাবে।
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন, গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আজিজুল হক খান মামুন, গোয়ালন্দ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ রফিকুল ইসলাম, বিআইডব্লিউটিএ’র উপ-পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন) মোহাঃ মাসুদপারভেজ,নৌ-সংরক্ষন ও পরিচালনা বিভাগের সহকারী পরিচালক মোঃ এনামূল হক,উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মকবুল হোসেন,আরিচার বন্দর সমন্বয় কর্মকর্তা মোঃ বেলায়েত হোসেনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আজিজুল হক খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, দৌলতদিয়া ঘাটকে আধুনিক নৌ-বন্দরে উন্নীত করন ও ঘাট সংরক্ষনের কাজ শীঘ্রই শুরু করা হবে।
তারই ধারাবাহিকতায় ঘাট এলাকার দুই কিলোমিটারের মধ্যে থাকা সকল অবৈধ স্হাপনা ও বালুর চাতাল সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। বালু ব্যাবসায়ীদের গত এক সপ্তাহ ধরে বলার পরও তারা গড়িমসি করছিল। যে কারনে আজকে অভিযান চালিয়ে তাদের নির্মিত ঘাট গুলো তুলে দেয়া হয়েছে।সেইসাথে বেশকিছু বালুভর্তি বলগেট ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এরপরও যদি তাদের কেউ এখানে বালুর ব্যাবসা চালানোর চেষ্টা করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।