স্টাফ রিপোর্টার, রাজবাড়ী টুডে: প্রিজনদের সাথে ঈদ করতে কর্মস্থল থেকে ০৮আগষ্ট বৃস্পতিবার ঈদের ছুটির প্রথম দিন থেকে নারির টানে বাড়ি ফিরতে শরু করেছে মানুষ। যাত্রীদের এমন চাপে অসাধু বাস ও মাহেন্দ্র মালিক ও শ্রমিকরা নিধারিত ভাড়ার চেয়ে ২গুন বেসি ভাড়া নিচ্ছে বলে অভিযোগ করছে যাত্রীরা।
দেশের দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার হিসাবে পরিচিত দৌলতদিয়া ফেরিঘাট, লঞ্চঘাট সহ বাস টার্মিনালে নারির টানে ঘরে ফেরা মানুষের ঢল নামা শুরু হয়েছে ০৮ আগষ্ট বৃহস্পতিবার ঈদের ছুটির প্রথম দিন থেকে। তবে ঘাট এলাকায় বিগত দিনের প্রতিবারের নেই কোন কোন যানজট। তপর রয়েছে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগ। সে কারেনই লঞ্চ ও ফেরি থেকে নেমেই কোন ঝামেলা ছাড়াই মানুষ পরিবহনে উঠে কোন ঝামেলা ছাড়াই যাচ্ছে গন্তব্যে।
দৌলতদিয়া ঘাটে কথিত ভিআইপির নামে ঘাট জন্ম থেকে চলে আসা নৈরাজ্য বন্ধ করে দিয়েছে নবাগত পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান। যে কারনেই এবার ঈদ যাত্রায় কোন দুর্ভোগে পরতে হয়নি ২১জেলার যাত্রীদের। এঘাট দিয়ে যাতায়াতকারী যাত্রীরা এমন সুন্দর ঘাট ব্যবস্থাপনা দেখে সবাই ভিশণ খুশি। যাত্রীরা বলেন ঈদে এ ঘাট দিয়ে বাড়িতে যাওয়া মানেই দুর্ভোগ আর সিমাহীন কষ্ট নিয়ে আমারা চলাচল করি। এবারও এমন টাই ছিল ধারনা তবে অেিতর সেই ধারনা এবার পালটে গেল ঘাটের এমন চিত্র দেখে। যা আমরা কখনো ভাবতে পারিনি যে দৌলতদিয়া ঘাটে কখনো এমন পরিবেশ হবে।
তবে লোকাল বাসে আসা যাত্রীদের কাছ থেকে বাস-ও মাহেন্দ্র থ্রী হুইলার অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে বলে অভিযোগ করছে একাধীক যাত্রীরা। বাড়ি ফেরা যাত্রীদের অভিযোগ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে ঘাট অঞ্চলে চলাচলকৃত বাস ও মাহেন্দ্র গুলো।
রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া ফরিদপুর সহ আসে পাশের জেলার বাস টার্মিনাল গুলো থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও এসব জেলার মাঝপথের যাত্রীদের চরম বিপাকে পরতে হচ্ছে। গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা এক প্রকার বাধ্য হয়েইে যাত্রীরা অতিরিক্ত টাকা দিয়ে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছে।
এ সময় ঢাকা থেকে রাজবাড়ীর উদ্দেশ্যে আসা লঞ্চের যাত্রী মোঃ মোশারফ বলেন, আমি ঢাকাতে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি ঈদ ছাড়াও মাঝে মধ্যেই বাড়িতে আসতে হয়। কোন দিন ভোগান্তি ছাড়া যেতে পারি না এ ঘাট দিয়ে। তবে বিগত কয়েক বছর ঈদের সময় যে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে এবছর তার উল্টো কোন ভোগান্তি নেই বলেই চলে। ঢাকার ঢাকার গাবতলি থেকে একটি লোকাল বাসে ৩০০টাকা ভাড়া দিয়ে সাথেই পাটুরিয়া ঘাটে আসি। যদিও গাবতলী থেকে পাটুরিয়ার ভাড়া ৮০/১০০টাকা। পরে লঞ্চে নদী পারি দিয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে আসি। কিন্তু দৌলতদিয়া ঘাটে আসার পর বাসে রাজবাড়ীর বড়পুল পর্যন্ত ভাড়া নিয়েছে ১৫০টাকা। কিন্তু নিয়মিত ভাড়া ৪০/৫০টাকা কিন্তু নিল ৩ডাবল কি আর করা বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত টাকা দিয়ে আমরা আমজনতা চালাচল করি কিন্তু আমাদের এই কষ্ট দেখারমত কেউ নেই।
ভাড়া বৃদ্ধি
দৌলতদিয়া ঘাট থেকে রাজবাড়ী মুর্গির ফার্ম-রেল গেট পর্যন্ত বাসারে ভাড়া নিরধারণ করা হয়েছে ঈদ উলক্ষে ৬৫টাকা যার স্বাভাবিক সময়ের ভাড়া ৪০/৫০/ টাকা। কিন্তু যাত্রীদের অভিযোগ-১৫০ টাকা ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।
দৌলতদিয়া থেকে পাংশা ঈদ উপলক্ষে ১৫০টাকা নিরধারন করা হয়েছে- যার স্বাভিক সময়ের ভাড়া ১০০ টাকা। যাত্রীদের অভিযোগ ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ২০০টাকা।
দৌলতদিয়া থেকে কুষ্টিয়া ঈদ উলক্ষে ২০০ টাকা নিরধারণ করা হয়েছে-যার স্বাভিক সময়ের ভাড়া১৫০ টাকা। যাত্রীদের অভিযোগ নেওয়া হচ্ছে ২৫০/৩০০ টাকা।
এবিষয়ে রাজবাড়ী বাস মালিক সমতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মুরাদ হোসেনের বক্তব্য নেওয়ার জন্য একাধীক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তবে জেলা পুলিশ আয়োজিত ঈদ উল-আযহা উপলক্ষে বিশেষ মতবিনিময় সভায় রাজবাড়ী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মুরাদ হোসেন বলে ছিলেন, প্রতি বছরের মত এবারও ঈদ সেই আগের নিধারিত ভাড়া নেওয়া হবে। জেলা পুলিশ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এনএসআই এর ডিবি ও কয়েকজন সাংবাদিক অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ তোলেন বাস ও মাহেন্দ্র এর বিরুদ্ধে। বাসে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে মোরাদ হোসেন বলেছিলেন, দৌলতদিয়া থেকে রাজবাড়ীর ভাড়া স্বাভাবিক সময়ের ৪০ টাকা থেকে ২৫টাকা বৃদ্ধি করে ৬৫ টাকা ও পাংশা স্বাভাবিক ১০০টাকার পরিবর্তে ৫০টাকা বৃদ্ধি করে ১৫০টাকা, দৌলতদিয়া থেকে কুষ্টিয়া স্বাভাবিক ১৫০টাকা-৫০টাকা করা হয়। এর বাইরে বাসের ভাড়া বেসি নেওয়া হয়না। তবে কেউ যদি ২০০টাকার টিকিট কেটে কুষ্টিার গাড়িতে উঠে রাজবাড়ী নামেন সে ক্ষেত্রে তো দৌলতদিয়া থেকে রাজবাড়ীর ভাড়া ২০০টাকা হলো। এখন এটাতো যাত্রীদের ভুল তারাই আগে আসার জন্য কুষ্টিয়ার গাড়িতে উঠছে।
গত রোজার ঈদে বলে ছিলেন দৌলতদিয়া থেকে রাজবাড়ীর ভাড়া স্বাভাবিক সময়ে ৪০ টাকা থেকে ২৫টাকা বৃদ্ধি করে ৬৫ টাকা ও পাংশা স্বাভাবিক ১০০টাকার পরিবর্তে ৫০টাকা বৃদ্ধি করে ১৫০টাকা, দৌলতদিয়া থেকে কুষ্টিয়া স্বাভাবিক ১৫০টাকা-৫০টাকা বৃদ্ধি করে ২০০টাকা করা হয়েছে। তিনি বলেন, এর থেকে যদি কোন পরিবহন ভাড়া বেসি নেয় তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ায় থেমে নেই অবৈধ মাহেন্দ্র
জেলা প্রশাসকের নির্দেশ অমান্য করে ভাড়া বৃদ্ধি করলো মাহেন্দ্র মালিক সমিতি
দৌলতদিয়া ঘাট থেকে রাজবাড়ী মুর্গির ফার্ম-রেল গেট পর্যন্ত মাহেন্দ্র‘র ভাড়া নিরধারণ করা হয়েছে ঈদ উলক্ষে ৬০টাকা যার স্বাভিক সময়ের ভাড়া-৪০ টাকা। কিন্তু যাত্রীদের অভিযোগ-১৫০ টাকা ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।
দৌলতদিয়া থেকে পাংশা ঈদ উপলক্ষে ১২০টাকা নিরধারন করা হয়েছে- যার স্বাভিক সময়ের ভাড়া ৭০টাকা। যাত্রীদের অভিযোগ ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ২০০টাকা।
রাজবাড়ী জেলা ডিজেল চালিত (মাহেন্দ্র, গ্রামবাংলা) অটোরিক্সা অটোটেম্পু মালিক সমিতির মালিক সমিতির সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, ঈদ উপলক্ষে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের সাথে আলোচনা করে দৌলতদিয়া থেকে রাজবাড়ী ৬০টাকা-পাংশা ১২০টাকা ভাড়া নেওয়া সিদ্ধান্ত হয়েছিল। আমরা মালিক পক্ষ চালকদের সেভাবেই ভাড়া নেওয়ার জন্য বলেছি। কিন্তু মাহেন্দ্র চালকরা আমাদের কথা বা প্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করে তাদের ইচ্ছে মত ১০০/১৫০টাকা ভাড়া আদায় করছে। আমরাও চাই যাতে যাত্রীদের কোন রকম হয়রানি না হোক। তিনি আরো বলেন, আমরা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।
সরে জমিনে ঘাট এলাকায় গিয়ে একাধীক যাত্রীদের সাথে কথা বলে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের সত্যতা পাওয়া যায়। যাত্রীরা বলেন, দৌলতদিয়া টু রাজবাড়ীর কোন কাউন্টার নেই। আছে দৌলতদিয়া টু কুষ্টিয়া যার ভাড়া ২০০টাকা। সে খানেই নামবো ভাড়া ২০০টাকা দিতে হবে। রাজবাড়ীর কোন বাস না পেয়ে বাধ্য হয়েই ২০০টাকা ভাড়া দিয়ে কুষ্টিার বাসে উঠেছি। এমন অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করার বিষয়টি নতুন নয়। প্রতি বছরেই ঈদ আসলেই পরিবহন মালিকরা এভাবে ভাড়ি বাড়িয়ে দেন বলে অভিযোগ যাত্রীদের।
ট্রাফিক ইন্সেপেক্টর মোঃ আবুল হোসেন বলেন, ০৮আগস্ট ভোর থেকে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাট দিয়ে যাত্রীরা বাস টার্মিনালে পৌছালে যাত্রীর এ চাপ শুরু হয়। তিনি আরো বলেন, যত বেলা বারে ততই যাত্রীর চাপ বৃদ্ধি পায়। অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন আমাদের কাছে এ পর্যন্ত কোন যাত্রী অভিযোগ করে নি যদি কেউ অভিযোগ করে আমারা সাথে সাথে ব্যবস্থা নিব।