স্টাফ রিপোর্টার, রাজবাড়ী টুডে: প্রকল্প‘র চূড়ান্ত বিল, জামানতের টাকা ও পৌর সভার ঠিকাদারী লাইন্সেস নবায়ন না করে দেওয়াসহ নানা অভিযোগ এনে রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র এর বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে ঠিকাদার মানিক সরদার।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বেলা ১২টায় নতুন বাজার মেসার্স রাসেল ট্রেডার্স এর ঠিকাদারী কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে মেসার্স রাসেল ট্রেডার্স এর স্বত্বাধিকারী মো. মানিক সরদার লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, রাজবাড়ী পৌরসভার তত্বাবধায়নে কয়েকটি প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে রাসেল ট্রেডার্স নির্বাচিত হয়। সে অনুযায়ী ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার পর কাজ শুরু করে কাজটি সমাপ্ত করা হয়েছে প্রায় ৪ বছর হতে চললো। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো প্রথম পর্যায়ে ২টি প্রকল্পের বিল চূড়ান্ত বিল ও জামানতের অর্থ আটকে রেখেছে পৌরসভা। এ বিষয়ে এল.জি.ই.ডি এর প্রকল্প পরিচালক প্রধান প্রকৌশলী ও স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় সরকার পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এর সচিব বরাবর আবেদন করা হয়েছে। পরবর্তিতে প্রকল্প পরিচালক বিষয়টি সরেজমিনে তদন্তের জন্য দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দল রাজবাড়ী সদর পৌরসভায় পাঠান। প্রতিনিধি দল রাজবাড়ী পৌরসভার উপ সহকারী প্রকৌশলী সিভিল মোশারফ আহমেদ লষ্কর ও আঃ সোবাহানকে নিয়ে সাইড (চৌরাস্তা মেছের ডাক্তার এর বাড়ি হতে গুদার বাজার বেড়ীবাঁধ পর্যন্ত ই/ঈ রাস্তা পর্যন্ত এই কাজটির প্যাকেজ নং জঅঔ/জউ/২০১৩-১৪/০১ ও ডাক্তার ইউনূস এর বাড়ি হতে মৃত চৌধুরী আলতাফ এর বাড়ি পর্যন্ত জঈঈ ড্রেন যাহার প্যাকেজ নং জঅঔ/জউ/২০১৩-১৪/০৩) পরিদর্শন করে। একই সঙ্গে অন্য অভিযোগগুলোর তদারকি করেন।
জঅঔ/জউ/২০১৩-১৪/০১ নং প্যাকেজের ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে প্রদত্ত অর্থের সনদপত্রে এই কাজের হিসাব না মিলায় পরবর্তীতে প্রকল্প পরিচালক বকেয়া বিল ও জামানতের টাকা এবং জঅঔ/জউ/২০১৩-১৪/০৩ নং প্যাকেজের চূড়ান্ত বিল, জামানতের টাকা এবং আর.সি.সি ড্রেনের কাজটির মেয়র মহোদয় ও নির্বাহী প্রকৌশলী (ভারঃ) মহম্মদ আলী খান এর মৌখিক আদেশে কিছু অংশ ব্রিকডেন করায় ও প্রকল্প পরিচালকের কাছে ব্রিকডেনের আংশিক বিল দেওয়ার নথি দেখালে প্রকল্প পরিচালক ব্রিকডেনের বিলটি ভৌতিক কাজের বিপরীতে যাবতীয় চূড়ান্ত বিল পরিশোধ করতে মেয়র মহোদয় বরাবর গত ০৮/০৫/২০১৮ইং, ১১/০৭/২০১৮ইং পত্র প্রেরণ করেন।
কিন্তু বিল ও জামানতের টাকা পরিশোধ না করায় ৫ (পাঁচ) কর্মদিবস সময় বেধে দিয়ে ঠিকাদারের বিল পরিশোধ করতে মেয়র বরাবর পত্র ২০/০৮/২০১৮ইং তারিখে পত্র প্রেরণ করেন। এতেও বিল পরিশোধ না করায় আবারও ৫ (পাঁচ) কর্মদিবসের মধ্যে ঠিকাদারের বিল পরিশোধ করার জন্য ২৮/১০/২০১৮ইং তারিখ পত্র প্রেরণ করেন। তা স্বত্বেও মেয়র মহোদয় বিল পরিশোধ করেননি।
আমার সম্পাদিত কাজের অভিযোগগুলো নিষ্পত্তি করার জন্য পৌরসভা থেকে আমার নামে নোটিশ করে একাধিকবার ডেকে নিয়েও নিষ্পত্তি না করে বিভিন্ন অজুহাতে বারবার ঘুরাইতে থাকেন। এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো প্রকল্প পরিচালক নিকট বিষয়টি জানানো হলে প্রকল্প পরিচালক আগারগাঁও আরডিসি ভবনে তার কার্যালয়ে আমাকে ও মেয়র সাহেবকে যেতে বলেন। নির্বাহী প্রকৌশলী (ভারঃ) মোহাম্মদ আলী খান ২১/০৩/২০১৯ইং তারিখে সকাল ১১.০০ ঘটিকার সময় প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয়ে উপস্থিত থাকতে বলেন। আমি ও আমার কাজের পার্টনার লিটন সাহা প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয়ে নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত হলেও মেয়র মহোদয় উপস্থিত হননি। তার কোনো প্রতিনিধিকেও পাঠাননি। আমি ও আমার কাজের পার্টনার লিটন সাহা দুপুর ১.০০টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে প্রকল্প পরিচালক ও উপ সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল বাতেন সাহেবের সঙ্গে কথা বলে ফিরে আসি।
ব্যক্তিগত মহম্মদ আলী চৌধুরীর কারণে রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র মহোদয় মহম্মদ আলী চৌধুরী আমার চূড়ান্ত বিল ও জামানতের টাকা দিচ্ছেন না বলে আমি মনেকরি।
রাজবাড়ী পৌরসভার তত্ত্বাবধায়নে জেনারেল ফান্ডের দুটি প্রকল্পের একটি বালিয়াকান্দি রোড হইতে চর লক্ষ্মীপুর আব্দুল রবের বাড়ি পর্যন্ত আরসিসি রাস্তা নির্মাণ ওয়ার্ক অর্ডারের পর যথারীতি কাজটির প্রকল্পের ৯০ শতাংশ কাজ সমাপ্ত করার পর রানিং বিল ও ঢালাই এর জন্য প্রকৌশলী দপ্তরে অনুমতি চাইলে, আমাকে টালবাহানা করে ঘুরাইতে থাকে, কিছু কর্মদিবস যাওয়ার পর আমি আবারও রানিং বিল ও ঢালাই এর অনুমতি চাহিলে সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী খাঁন আমাকে বলেন মেয়র স্যার ঢালাই এর জন্য অন্য প্রতিষ্ঠান আজিম ট্রেডার্সকে কাজ করার অনুমতি দিয়েছেন। এ কারণে আমি আপনাকে ঢালাই করার অনুমতি দিতে পারছি না।
এ বিষয়ে একাধিকবার নির্বাহী প্রকৌশলী (ভারঃ) মোহাম্মদ আলী খাঁন ও মেয়র মহোদয় এর নিকট সমাধান ও ঠিকাদারি আইন লঙ্ঘন করার কারণ লিখিত ভাবে জানতে চাইলেও পৌর কর্তৃপক্ষ এর কোনো কারণ মৌখিক কিংবা লিখিত কোনভাবেই জানায়নি। দ্বিতীয় প্রকল্প রাজবাড়ী ফরিদপুর হাইওয়ে রাস্তা হতে সিদ্দিক মাষ্টারের বাড়ি সংলগ্ন অলিউর রহমানের বাড়ি পর্যন্ত আরসিসি রাস্তা কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজটি সমাপ্ত করেছি প্রায় চার বছর হলো। এই প্রকল্পের জামানতের টাকাও মেয়র সাহেব দিচ্ছেন না।
এছাড়া আর.সি.এল-এম.আর.এস (জেবি) এর লাইসেন্স এ রাজবাড়ী পৌরসভা তত্ত্বাবধায়নে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট মিউনিসিপল (বি.এম.ডি.এফ) কাজের ১০% জামানত ও ১০% চূড়ান্ত বিল এর টাকা ও ডব্লিউ.বি.এম হিসাব দিচ্ছেন না। এমতবস্থায় নতুন করে আবেদন করা হলে নির্বাহী প্রকৌশলী ভারঃ এর দপ্তর ও মেয়র মহোদয়ের দপ্তরে আবেদন জমা রাখছেন না।
এদিকে আমার লাইসেন্স নবায়ন করার জন্য বারবার আবেদন করা হলেও মেয়র মহোদয় তার কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না।
আমি ব্যবসায়িক শালিস নামা মেয়র মহোদয় বরাবর পাঠিয়েছি প্রায় দেড় বছর হতে চললো। সে বিষয়েও মেয়র মহোদয় কোনো ব্যবস্থা নেননি।