স্টাফ রিপোর্টার, রাজবাড়ী টুডে :
রাজবাড়ীর ট্রাফিক অফিসের সার্জেন্ট শাহ নেওয়াজ গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাটে দায়িত্বরত অবস্থায় চাঁদা আদায়ে ব্যর্থ হওয়ায় ট্রাক চালককে খুটিতে বেধে বেধরক মারপিট করায় এক ট্রাক ড্রাইভার গুরুত্বর আহত হয়েছে।
আহত ট্রাক ড্রাইভার মো: শফিকুল ইসলাম বাবু সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা থানাধীন পুষ্পকাঠি এলাকার মৃত ইসহাক সরদারের ছেলে। ঘটনায় আহত চালকের বাম হাতের বাহুতে, দু পাশে লাঠির আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়।
শুক্রবার ভোর রাত ৪টার দিকে ট্রাক ড্রাইভার মো: শফিকুল ইসলাম বাবু(৩৩) এর কাছে ৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না পেয়ে ট্রাকে উঠে ড্রাইভারকে বেধরক ঘুষি মারে। এক পর্যায়ে ট্রাক ড্রাইভারকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে অবস্থিত ফিলিং ষ্টেশনে গাড়ি থামায়। গাড়ি থেকে নামিয়ে ড্রাইভার শফিকুল ইসলামকে খুটির সাথে বেধে কাঠের চলা ও রুল দিয়ে বেধরক মারপিটে জ্ঞান হারায়। পরবর্তিতে দৌলতদিয়ার স্থানীয় মঞ্জু তাকে ঘটনা স্থল থেকে উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন কালে আহত ট্রাক ডাইভার মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত ভোর রাত ৪টার (শুক্রবার) দিকে ঢাকা থেকে যশোর গামী রড় বোঝাই করা যশোর-ট-১১-৩১৩১ ট্রাকটি পাটুরিয়া ঘাট থেকে দৌলতদিয়ার ঘাটে পৌছায়। দৌলতদিয়া ট্রাফিক অফিসের সামনে আসা মাত্র সার্জেন্ট শাহ নেওয়াজ গাড়ী থামানো ইশারা করে। আমি গাড়ি থামালে সার্জেন্ট শাহ নেওয়াজ গাড়ির কাগজ পত্র দেখতে চায়।
চালকের কাছে কাগজ না থাকায় কেস স্লিপের কথা স্বীকার করে। চালকের কাছে কাগজ পত্র না থাকায় ৫ হাজার টাকার দাবি করে ট্রাফিক সার্জেন্ট। এতো রাতে আমি কোথায় থেকে আপনাকে ৫ হাজার টাকা দিবো। এ কথা বলতেই ট্রাফিক সাজেন্ট শাহ নেওয়াজ আমার শার্টের কলার টেনে ধরে। এসময় গলায় সার্জেন্টের হাতের আঙ্গুল বিধে ক্ষত হয়ে যায় ট্রাক ড্রাইভারের। এমনি সব কথা জানালেন ড্রাইভার শফিকুল।
এ ব্যপারে মোবাইল ফোনে ট্রাফিক সার্জেন্ট শাহ নেওয়াজ এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ট্রাক ড্রাইভার প্রয়োজনীয় কাছে কাগজ পত্র দেখাতে না পারায় আমি তাকে চ্যালেঞ্জ করি। ট্রাক চালক আমাকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ করে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলাধীন দৌলতদিয়া ঘাট দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার ঢাকামূখী প্রবেশদ্বার। আর পদ্মা নদীর দৌলতদিয়া- পাটুরিয়া নৌরুটে প্রতিনিয়ত ঢাকামূখী ও দেশের রাজধানী ঢাকা থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের প্রবেশ করে সহস্রাধিক বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকার সহ বিভিন্ন যানবাহন।
অভিজ্ঞ মহল বলেন, দেশের নৌরুটের গুরুত্ব পূর্ণ স্থান রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাট। আর এ ঘাটে যদি পুলিশের পোশাক পড়ে দেশের সেবা না করে নিরীহ ট্রাক ড্রাইভারদের উপর অমানুষিক নির্যাতন করে তাহলে সাধারণ মানুষরা পুলিশের উপর থেকে বিশ্বাস হারাবে।