স্টাফ রিপোর্টার, রাজবাড়ী টুডে : শত শত বালু ভর্তি ট্রাক ও বিভিন্ন পর্ণবাহী গাড়ির অত্যাচারে পৌরবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। যদিও নিয়ম রয়েছে রাত ৮টার আগে পৌর এলাকার মধ্যে ট্রাক চলাচল নিষিদ্ধ। তবুও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ট্রাক গুলো দেখার যেন কেউ কেউ নেই। পৌরবাসীর এমন দুর্ভোগ থেকে বাচাঁতে এগিয়ে এসেছন যুবসমাজ।
২৭ জুলাই শনিবার সকাল ১০টার দিবে শহরের কাজিকান্দা সেগুন বাগান এলাকয় বেস কয়েকটি বালুর ট্রাক আটকে রাখে প্রতিবাদি যুবক জিসান খানের নেতৃত্বে আয়ন,পলাস,রাবেত,জয়,ইফতি,সান্ত,সাকিল,আনিক সহ অশংখ্য যুবক প্রায় এক ঘন্টা রাস্তা অবরোধ করে রাখে।এসময় কোন বালুর ট্রাককে চলাচল করতে দেয়নি অবরোধকারীরা।
প্রতিদিনই এসব ট্রাক পৌর শহরের বিভিন্ন রাস্তায় চলাচলের কারনে স্থানীয় বাসিন্দাসহ সাধারণ পথচারী ও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের সীমাহীন দুভোর্গ পোহাতে হচ্ছে।
জিসান খানা বলেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ একটি রাস্তা। এই রাস্তা দিয়ে বেসকয়েকটি স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা যাতায়ত করে। তাছারাও এই সরকারী সদর হাসপাতাল সহ বেস কয়েকটি ক্লিনিক আছে। সে কারনেই অনেক জরুরী রুগি যাতায়াত করে এই সড়কটি দিয়ে। এমন জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক দিয়ে দিনের বেলায় এই শত শত বালু ভর্তি ট্রাক ও বিভিন্ন পর্ণবাহী গাড়ি চলাচল করে। এসকল ট্রাক চালকদের অত্যাচারে আমরা পৌরবাসী অতিষ্ঠ হয়ে বাধ্য হয়েই রাস্তা অবোরধ করতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের দাবি দিনের বেলায় কোন ট্রাক পৌর শহরের মধ্যে চলাচল করবে না।
পদ্মা নদীর কোল ঘেষা সাজানো ঘোছানো ছোট্র একটি শহর রাজবাড়ী নৈসর্গিক সৌন্দর্যের অপূর্ব লীলাভূমি হিসাবে পরিচিত রাজবাড়ী পৌসভা এলাকা। আর সেই এলাকার সৌন্দর্য নষ্টের অন্যতম কারন বালুর ট্রাক।
সাদমান সাকিব রাফি বলেন, আমাদের আবাসিক এলাকার ছোট রাস্তাা দিয়ে সারাদিন ট্রাক চলে, তার ফলে রাস্তায় অন্যকোন যানবাহন (মটরসাইকেল,সাইকেল,রিক্সা) এবং মানুষ নিরাপদে চলাচল করতে পারেনা। সারাদিন এত ট্রাক চলার কারণে রাস্তা গুলো খুব দ্রুত ভেঙ্গে যায়। সে জন্য এই আবাসিক এলাকার রাস্তা দিয়ে ট্রাক চলা বন্ধ করতে হবে প্রশাসনকে।
এসব বালু, প্রতিদিন প্রায় এক হাজার থেকে ১২ শত ট্রাক বালু সংগ্রহ করে রাজবাড়ীসহ আসে পাশের কয়েকটি জেলার বিভিন্ন স্থানে পরিবহন করে আসছে। যদিও রাত ৮টার আগে শহরের মধ্যে কোন ট্রাক ঢোকার নিয়ম নেই। আইন-শৃঙ্খলা বাহীনির সদস্যরাও নিচ্ছে না কোন ব্যবস্থা অভিযোগ পৌরবাসীর।
বালু ভর্তি ওইসব ট্রাক গুলো ধাওয়া পাড়া ও রাজবাড়ী পৌর এলাকার গোদারবাজার শহর রক্ষা বেড়ীবাধ দিয়ে, রাজবাড়ী সরকারী কলেজ, ড্রাইচ ফ্যাক্ট্রারী বিনোদপুর পুলিশ ফাঁড়ি, শহরের ২নং রেলগেট এলাকা দিয়ে রাজবাড়ী ১ আসনের সংসদ সদস্যের বাড়ির সামনের সড়ক হয়ে হাসপাতাল সড়ক দিয়ে প্রতি নিয়ত বালু ও মালবাহী শহত ট্রাক চলাচল করে। আর এই জন-গুরুত্বপূর্ণ সড়কের আসে পাশে রয়েছে কয়েকটি স্কুল ও কলেজ। চলাচল করার সময় ট্রাকের উচ্চ শব্দের হুইসেল বাজায়। ওইসব গাড়ি থেকে বাতাসে বালু উড়ে গিয়ে আশেপাশের দোকানপাটসহ পথচারী এবং শিক্ষার্থীদের নোংরা করে দেয়। ফলে ট্রাকের অত্যাচারে অতিষ্ঠ পৌরবাসী।
উল্লেখ্য গত ১৩ এপ্রিল মাসে শনিবার সকাল ৯টার দিকে বালুবাহী একটি ট্রাকের চাপায় দুই সন্তানের জনক বাক প্রতিবন্ধী সুব্রত (৩৫) নামে এক রিক্সা চালক নিহত হয়েছেন। যে ট্রাকের ছিলনা কাগজ পত্রের ডেট- এমন (ফিটনেসবিহীন) ট্রাকের কারনে মাঝে মধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা।
ভুক্তভোগীরা কয়েকজন জানান, রাস্তাগুলো এমনিতেই সরু। এইসব সরু রাস্তা প্রতিনিয়ত অসংখ্য ট্রাক, অন্যান্য যানবাহন যাতায়াতের ফলে সড়কগুলো ভেঙ্গে যাচ্ছে। এছাড়া সরু সড়কগুলোর পাশেই রাস্তা দখল করে এক শ্রেণির লোকজন পণ্য সাজিয়ে ব্যবসা করছেন। এ অবস্থায় স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষার্থী, পথচারী ও পৌরবাসী সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। আবার দীর্ঘ যানজট লেগে থাকায় ব্যবসা বাণিজ্য মন্দা যাচ্ছে বলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। দ্রুত এ যানজট নিরসনে ট্রাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কছে জোর দাবীও জানান তারা।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী পৌর মেয়র মহাম্মদ আলী চৌধুরী সাথে কথা হলে তিনি দিনের বেলায় ট্রাক চলাচল ও ট্রাকজটের কথা স্বীকার করে জানান, বালুর ট্রাক একটি আতংঙ্কের নাম। তিনি বলেন আমি নিজেই একদিন ট্রাকের নিচে পরতে বেচেঁ গেছি। যদিও পৌর এলাকায় দিনের বেলায় কোন ট্রাক ঢোকার নিয়ম নেই। কিছু দিন আগেও একজন রিক্সা চালক বোবা কে বালুর ট্রাকের চাপায় মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে।তাই যতদ্রুত সম্ভব এই ট্রাক চলাচলের বিষয়ে ব্যাবস্থা করা হবে।এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।