খন্দকার রবিউল ইসলাম >> বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি ও র্যাব প্রধান কর্তৃক মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনার পর সারাদেশে শতাধিক মাদক সম্রাট নিহত হয়েছে, উদ্ধার হয়েছে হাজার কোটি টাকা মুল্যের মাদক দ্রব্য।
কিন্তু রাজবাড়ীর অতিগুরুত্বপুর্ন গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাটের এ চিত্র একটু ভিন্ন। দৌলতদিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত যৌনপল্লী কে ঘিরে অন্তত ৫০জন বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি, শতাধিক বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতা মাদক সেবন ও ব্যাবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ আছ। দৌলতদিয়া পল্লী থেকে জনপ্রতিনিধি কাউন্সিলর মাদক সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছে এমন ঘটনাও কমন নয়।।
ওইসব জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতার পৃষ্টপোষকতায় উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে নানা কৌশলে মাদক ব্যাবসা চলছে। গুরুত্বপূর্ন লোকগুলো মাদক কারবারে জড়িত থাকায় পুলিশ প্রশাসন মাদক নিয়ন্ত্রনে বারবার ব্যার্থ হয়েছে। নেতাদের মধ্যে কয়েকজন তালিকাভুক্ত মাদক বিক্রেতার বাড়ীতে অভিযান চালিয়ে ব্যার্থ হয়েছে প্রশাসন।আবার কোথাও কোথাও সফল হয়েছে, উদ্ধার হয়েছে বিভিন্ন মাদক দ্রব্য। চলমান অভিযানের আগেও, প্রায় প্রতিদিন মাদকসহ মাদক কারবারি আটক হতো। বিশেষ অভিযানে সারাদেশে সফলতা আসলেও রাজবাড়ীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যার্থ।
স্থানীয়ভাবে কথিত আছে, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা ও পুলিশ এবং সাংবাদিকের যোগসাজশে মাদক ব্যাবসা চলতো। থানায় মাসোয়ারা দিলেই মাদক স্ফট বৈধ। এখন এমনটা দেখা যায়না। তবে ওইসব কথিত বৈধ বিক্রেতারা বার বার রক্ষা পাওয়ায় জনমনে প্রশ্ন থেকেই যাবে। দৌলতদিয়া যৌনপল্লী গোয়ালন্দ ঘাট থানার থেকে মাত্র ৪/থেকে ৫কিঃ মিঃ দূরত্ব ! কিন্তু এই যৌন পল্লীতে ই চলছে প্রতি দিন কোটি টাকার মাদক বেচা কেনা।।
এমন অবাদে মাদক ব্যবসা চললে জন মনে তো প্রশ্ন আসতেই পারে তাহলে কি সেই পরনো চিত্র ই মনে করিয়ে দিচ্ছে।। তালিকাভুক্ত মাদক বিক্রেতা মাদক সহ হাতেনাতে ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক আটক হয়। আবার কিছু দিন পর জামিনে বের হয়েই সেই পুরনো চিত্র।
তাহলে কি এখনো জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, মাদক বিক্রেতা ও প্রশাসনের যোগসাজশ থাকতে পারে? রাজবাড়ী জেলা একটি ছোট্ট জেলা হলে ও ঢাকা রাজধানী সাথে ২১টি জেলার প্রবেশদ্বার হিসেবে এই জেলার অনেক গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া ঘাট। যে ঘাট দিয়ে প্রতিদিন ৪\৫হাজার যানবাহন চলাচল করে এ নৌরুটে।।
আর এই ঘাটে রয়েছে বাংলাদেশ এর সবচে বৃহৎতর যৌনপল্লী। যে পল্লীতে ৫\৬হাজার যৌনকর্মীর বসবাস। এই পল্লী কে ঘিরে গড়ে উঠেছে শতাধিক মাদক স্পট। নদী পথ ও রেল পথ থাকায় রাজবাড়ীতে অবাধে প্রবেশ করে সকল ধরনের মাদক। অর্থনৈতিকভাবেও এ জেলার মানুষ মোটামুটি স্বাবলম্বী। জেলার অতিগুরুত্বপুর্ন উপজেলা গোয়ালন্দ। উপজেলার প্রায় সবকটি ছোট বড় হাট বাজারে এবং শতাধিক পয়েন্টে ভ্রাম্যমানভাবে মাদক বিক্রি হয়। এসব বিক্রয় কেন্দ্র এবং বিক্রেতাদের পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা ভালোভাবে চিনে জানে। অনেকেই বার বার গ্রেপ্তার হয়ে আদালতের মাধ্যমে জামিনে বেরিয়ে এসে আবারো সেই পেশায় ফিরে যায়। তবে যাদের হাত ধরে ওইসব পয়েন্ট দিয়ে রাজবাড়ীতে মাদক প্রবেশ করে বিক্রয়থট পয়েন্ট গুলোতে পৌছে যায় তারাই সবসময় ধরাছোঁয়ার বাহিরে।
উপজেলায় ১০-১২ জন মাদকের ডিলার মোবাইল ফোন ব্যাবহার করে ওই কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। জানামতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের তালিকাভুক্ত কয়েকজন মাদক সম্রাট রাজবাড়ীতে রয়েছে। মাঝে মধ্যে দেখা যায় অনেক জনপ্রতিনিধি মাদক বিক্রেতাকে পুলিশে সোপর্দ করেন।
স্থানীয়দের মতে ভাগবাটোয়ারা সঠিক না হলে এমন ঘটনা ঘটে।আবার নিজস্ব বিক্রেতাকে সুযোগ করে দিতেও এহেন ঘটনা ঘটতে পারে। কিছু হোয়াইট ক্রিমিনাল, ভালো পোশাকে, দৌলতদিয়া পোড়া ভিটা , যৌনপল্লী ও সদর উপজেলার পাচুরিয়া আন্ধার মানিক, বরাট ইউনিয়নের উড়াকান্দা, বানিবহ ইউনিয়ন, আলাদিপুর বটতলা, মিজনপুর ইউনিয়ন, রাজবাড়ী শহরের মেছঘাটা, লকসেড, শ্রীপুর, সোনাকান্দর, গোদারবাজার সহ বিভিন্ন অঞ্চল সহ গুরুত্বপূর্ন স্থাপনায় বসে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমদানীকৃত মাদক বন্টন করে থাকে। আর এসব কাজে ব্যাবহার হচ্ছে যাত্রীবাহী অথবা মালবাহী যানবাহন। এসব কারনেই সহজে মাদক নিয়ন্ত্রন সম্ভব নয়।
খন্দকার রবিউল ইসলাম
সভাপতি রাজবাড়ী সাংবাদিক ফোরাম