মো: মাহ্ফুজুর রহমান,রাজবাড়ী টুডে ডট কম: রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। গত ২ মাস আগে পদ্মার প্রবল ভাঙনে ভিটে মাটি ছাড়া হয়ে দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ছিদ্দিক কাজী পাড়া, ছাত্তার মেম্বার পাড়া, ৪টি ফেরী ঘাট এলাকায় প্রায় দুই শতাধিক পরিবার ।
এসকল পরিবার এখন ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। প্রয়োজনী খাবারের অভাবে না খেয়েই কাটছে এক একটি দিন, নেই অর্থের যোগান। অপর দিকে উপজেলাধীন দেবগ্রাম ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৫ শতাধিক পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ছে।
দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নের পদ্মা তীরবর্তী ভাঙন বাদেও বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে তাদের বাড়ী ঘরে পানি ঢুকে পড়ে। এতে করে কয়েকশত একর জমি ডুবে ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এদের সামান্য কিছু পরিবার আর্থিক সামর্থ থাকায় ভাঙন এলাকা থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে পাশে বাড়ী ঘর সরিয়ে নিয়েছে। ২ মাস অতিবাহিত হলেও ঘর তোলার কোন জায়গা নেই তাদের। এখনও মহাসড়কের পাশে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে পদ্মার ভাঙন ও বানভাসি মানুষ।
সরেজমিনে পরিদর্শন করে চোখে পড়ে, দৌলতদিয়ায় পদ্মা ভাঙন কবলিতরা ২ মাস আগে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দুই পাশে তাদের ঘর বাড়ীগুলো যে ভাবে স্তুপ করে রেখেছিল, এখন সেভাবেই রয়েছে। সবার চোখে মুখে হতাশার ছাপ ফুটে উঠেছে। তাদের মানবেতর জীবন যাপন করতে দেখা যায়।
তাদের খোঁজ খবর জানতে চাইলে অশ্রুভেজা নয়নে তাদের আশ্রয় না পাওয়ার বেদনা প্রকাশ করেন। ঘর তোলার মত কোন জায়গা জমিন নাই। পুনরায় ঘর তুলে মাতা গোজারমত কোন ব্যবস্থা নাই। এরা সবাই দিন এনে দিন খায়। সামান্য আয়ের দিন মজুর মানুষগুলো তাদের পরিবারের নিত্য প্রয়োজনী ও গৃহপালিত গরু-ছাগল নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে।
পদ্মা নদী ভাঙনের পর আকবর সরদার, আলী আকবর, মজিবর মোল্লা, শুকুর আলী, মোস্তফা, আঃ ছালাম প্রামানিক সহ প্রায় ২ শতাধিক পরিবার এই সড়কের পাশে অবস্থান করছে।
তারা জানান, মাঝে মাঝে বৃষ্টিতে ভিজে, রাতে চোরের উপদ্রব, জানমালের ভয় আতঙ্ক নিয়ে বেচে আছি। বলেন, ‘দৌলতদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: নূরুল ইসলাম মন্ডল কয়েক বার নগদ টাকা ও ১০কেজি চাল দিয়ে ছিল। সেই মাঝে মধ্যে খোজ খবর নেই। কিন্তু সরকার আমাদের থাকার কোন ব্যবস্থা করছে না।’
এ ব্যপারে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও দৌলতদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মন্ডল বলেন, ‘নদী ভাঙনে আমার এলাকার প্রায় ২ শতাধিক পরিবার সড়কের পাশে আশ্রয় নিয়েছে। আমরা যা সাহায্য করেছি তা সরকারের পক্ষ থেকেই করা হয়েছে।’
এসময় তিনি আরও বলেন, তাদের নিজস্ব কোন জায়গা নাই। আমরা চেষ্টা করছি ব্যক্তি মালিকানা জায়গায় সনকরা জমি নিয়ে তাদের ঘর তোলার ব্যবস্থা করার জন্য। বৃষ্টি বাদলা শেষ হলে তাদের পূনর্বাসনের কাজে হাত দেব।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার পঙ্কজ ঘোষ বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুতই তাদের পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।