মেহেদুল হাসান আক্কাছ, রাজবাড়ী ডুডে ডট কম:
“দৌলতদিয়ার প্রভাবশালী ছলেমান আমাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে অন্তত বিশ ঘন্টা আটকে রেখেছিল। পুলিশ, সাংবাদিকসহ কাউকে কিছু বললে ছলেমান আমাকে প্রাণে মেরে ফেলবে।আপনারা কি আমার নিরাপত্তা দিতে পারবেন?”
এভাবেই শনিবার সন্ধ্যায় রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহাজারি করছিলেন দৌলতদিয়া পতিতাপল্লীর বাসিন্দা লাকি(২৬)।
নিরাপত্তার বিষয়ে তাকে আশ্বস্ত করলে তিনি জানান, একজন পতিতার ঘরে জন্ম নিয়ে তার জীবন শুরু হয় পতিতা বৃত্তি দিয়ে।
দীর্ঘদিন ওই পেশা থেকে তিল তিল করে টাকা জমিয়ে তিনি দৌলতদিয়া পতিতাপল্লীতে একটি বাড়ির মালিক হন।
সম্প্রতি ওই বাড়ির দিকে নজর পড়ে স্থানীয় এক প্রভাবশালীর আত্মীয় দৌলতদিয়া ইউনিয়নের সামছু মাস্টার পাড়া গ্রামের আ. হালিমের ছেলে ছলেমানের। তাকে তার বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতে তিনি শুরু করেন লাকির উপর শারীরিক নির্যাতন।
এরই ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার সন্ধ্যায় লাকিকে পিটিয়ে মারাত্মক জখম করে। তার একটি চোখ উপরে ফেলতে ধারালো ছুরি ঢুকিয়ে দেয় চোখের পাশে।
বিষয়টি যাতে সভ্য সমাজের কেউ না জানতে পারে এজন্য তাকে (লাকি) আটকে রাখে ছলেমান। তাকে চিকিৎসার জন্য চেষ্টা করায় তার বোন লাবনীকেও ছলেমানের মারপিটের শিকার হতে হয়।
লাকির সাথে থাকা লাবনীর শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখিয়ে জানায়, কাউকে কিছু না বলার শর্তে অনেক অনুরোধ করে ছলেমানের কবল থেকে লাখীকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।
পুলিশে অভিযোগ করবেন নাকি জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, “ওরা প্রভাবশালী, ওদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে লাভ কি? তারপরও আগে আমার বোনকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করি তারপর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।”
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শফিউল আযম জানান, গুরুতর আহত ওই রোগীর সারা শরীরে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে।
চোখের পাশের ক্ষতটি বেশি মারাত্মক। তাই তাকে জরুরী ভিত্তিতে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।