নজিরবিহীন নিরাপত্তা ও মুসলধারে বৃষ্টির মধ্যে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহে ঈদুল আজহার ১৮৯তম জামাত শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে এবার ঈদের জামাতে মুসল্লিদের উপস্থিতি অনেক কম ছিল। জামাতে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, শান্তি কামনা করে দোয়াসহ জঙ্গিবাদবিরোধী লড়াইয়ে সবাইকে সামিল হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টায় ঈদের জামাত শুরু হয়। এর আগে কঠোর পুলিশি বেষ্টনির মধ্যে মাঠে নেওয়া হয় ইমামকে।
কিশোরগঞ্জে গত রাত থেকে ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়, যা সকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এই বৃষ্টি উপেক্ষা করে এদিন স্বল্পসংখ্যক মুসল্লি ঈদের নামাজে অংশ নিতে শোলাকিয়া ময়দানে যায়। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া থাকলেও কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনি পার হয়ে মুসল্লিদের মাঠে ঢুকতে দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রত্যেক মুসল্লিকে অন্তত তিনবার তল্লাশির মুখে পড়তে হয়।
ঈদের জামাতকে নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছিল ব্যাপক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা। শোলাকিয়া মাঠ, এর আশপাশ ও শহরে তিন প্লাটুন বিজিবি, বিপুল সংখ্যক র্যাব, পুলিশ, এপিবিএন, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন ছিল। প্রবল বৃষ্টিতে মাঠের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে কর্দমাক্ত হয়ে যায়। হাজারখানিক মুসল্লি এই পানি ও কাদার মধ্যেই ঈদের জামাত আদায় করেন।
নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া করা ছাড়াও জঙ্গিবাদবিরোধী লড়াই করতে গিয়ে যেসব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের আত্মার শান্তি ও জঙ্গিবাদবিরোধী লড়াইয়ে সবাইকে সামিল হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। তাছাড়া যেসব যুবককে ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জঙ্গিবাদের মতো বিপথে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাদের সুপথে ফিরিয়ে আনতেও আল্লাহর কাছে দোয়া করা হয়।
এদিকে এবারের জামাতে লোক কম হলেও তাদের জন্য বিশুদ্ধ পানি, প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র, ওজুখানা ও টয়লেটের মতো জরুরী সেবার আয়োজন করেছিল প্রশাসন। দূর-দারান্তের মুসল্লিদের জন্য করা হয়েছিল দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা। পুলিশ জানিয়েছে, এবার শোলাকিয়ার নিরাপত্তায় আইনশৃক্সখলা বাহিনীর অন্তত এক হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়।
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও শোলাকিয়া ঈদগাহ কমিটির সভাপতি মো. আজিমুদ্দিন বিশ্বাস জানান, ঈদুল-ফিতরে জঙ্গি হামলার ঘটনায় ঈদুল-আযহায় মুসুল্লীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৩ প্লাটুন বিজিবিসহ, র্যাব, পুলিশ ও আমডর্স পুলিশ মোতায়েন করা হয়। প্রতিবারেই ঈদুল-ফিতরের তুলনায় ঈদুল-আযহায় মুসুল্লীদের উপস্থিতি কম হয়ে থাকে। এবার ১৮৯তম ঈদুল-আযহার জামাতে দুযোর্গপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে আরো কম লোক হয়েছে।
তিনি আরো জানান, এবার জামাতে সহস্রাধিক মুসুল্লি অংশ নিয়েছেন।