স্টাফ রিপোর্টার, রাজবাড়ী টুডে:
গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ও দৌলতদিয়া ইউনিয়নের বেতকা, রাখালগাছী, ধোপাগাথী, ছিদ্দিক গাজীরপাড়া, ছাত্তার মেম্বর পাড়া, চরকরনেশন সহ বিভিন্ন গ্রামের কয়েক হাজার পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে।
পর্যায় ক্রমে কয়েক বছরের পদ্মার প্রবল ভাঙনে ভিটে মাটি হারা হয়ে বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নেওয়া মানুষ গুলি বর্তমানে নাগরিক সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। শতশত পরিবারের এখনও মাথা গোজার ঠাই হয় নাই। হারিয়ে ফেলেছে তাদের স্থায়ী ঠিকানা।
ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যাতায়াত কালে সড়কের পাশে স্তুপ করে রাখা নদী ভাঙ্গা মানুষের ঘরবাড়ী এখনও চোখে পড়ে। তারা ফসলের জমি হারিয়ে কৃষি কাজ থেকে বঞ্চিত হয়ে ভিন্ন পেশা বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে। তাদের অনেকেই বিভিন্ন এলাকায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছে।
নদী ভাঙনের কারনে সম্প্রতি ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত হয়নি দেবগ্রাম ও দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। সংকট সৃষ্টি হয়েছে নদী ভাঙ্গা এলাকার সীমানা নির্ধারন। ভোটার তালিকায় অর্ন্তভূক্ত মানুষ থাকলেও নেই তাদের ঠিকানায় বাসস্থান। আবার যে ঠিকানায় বসবাস করে সেই স্থানে ভোটার তালিকায় নাম নাই।
এমতাবস্থায় বঞ্চিত হচ্ছে তারা সরকারী সাহায্য থেকে শুরু করে সকল নাগরিক সুবিধা। দুঃস্থ পরিবারগুলো স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সুবিধা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে বিদেশ গমন ও চাকুরী পাওয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। এছাড়া বসবাসের ঠিকানা ও জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা ভিন্ন থাকায় বর্তমান জঙ্গী পরিস্থিতিতে আতঙ্ক প্রকাশ করে অনেকেই।
জানা গেছে, দেবগ্রাম ইউনিয়নের ২ ৩ ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের কোন এলাকা সম্পুর্ন ও কোন ওয়ার্ড আংশিক নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এ সব এলাকার প্রায় ৩ হাজার ভোটার পাশর্^বর্তী ছোট ভাকলা ও দৌলতদিয়া ইউনিয়নে বসবাস করছে।
এসময় ঐ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতর আলী সরদার বলেন, আমার ইউনিয়নের কয়েকটি ওয়ার্ডের অধিকাংশ এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে করে ঐ এলাকার ২৪৫০ জন ভোটার তাদের বাড়ীঘর ভেঙ্গে পাশের ইউনিয়ন ছোট ভালকা ও দৌলতদিয়া এলাকায় বসবাস করছে। এ কারনে ওই ভোটার গুলো আমার ইউনিয়নের সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছে। আবার ভোটার তালিকায় নাম না থাকা ঐ এলাকা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। তাদের হয় ঐ ইউনিয়নে তালিকা করা দরকার। নইলে বসবাস কারী এলাকাগুলো এই ইউনিয়নের অর্ন্তভূক্ত করা দরকার। এভাবে তারা নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়ন থেকে আসা ছোট ভাকলা ইউনিয়নে বসবাসকারী নদী ভাঙ্গা রাহেলা বেগম ও মরিয়ম বিবি জানান, তাদের ছেলেরা বিদেশে যাওয়ার জন্য পাশপোর্ট করতে পুলিশ ভেরিভিকেশন করার সময় জাতীয় পরিচয় পত্রে ঠিকানা অন্য ইউনয়নে হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছিল। চাকুরী করার সময়ও জটিল সমস্যায় পড়তে হয়।
এছাড়া দুর্ভোগে পড়া অনেকেই দাবী করেন, অতি দ্রুত গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার নদী ভাঙ্গা মানুষগুলির স্থায়ী সমাধান হওয়া দরকার।